May 1, 2022

Bonding and Emancipation in Rabindranath Tagore’s Theatrical Narratives

LOKOGANDHAR ISSN : 2582-2705
Indigenous Art & Culture

Dr. Srabani Sen

Abstract: Rabindranath Tagore, a multifaceted literary luminary, delved into the intricate dynamics of human relationships and societal structures in his plays. This study focuses on the thematic interplay of bonding and emancipation within Tagore’s theatrical works. Tagore, a Nobel laureate poet and playwright, weaves narratives that portray the delicate balance between attachment and the quest for individual freedom. This examination explores how characters in Tagore’s plays navigate the complexities of familial, societal, and romantic bonds, while simultaneously seeking emancipation from the constraints imposed by tradition and societal expectations. By scrutinizing the nuanced character interactions, symbolic elements, and thematic undertones in Tagore’s plays, this research aims to illuminate the profound exploration of human connections and the inherent tension between attachment and the pursuit of personal liberty in the context of Tagore’s dramatic oeuvre. The study contributes to a deeper understanding of Tagore’s philosophical perspectives on the human condition and sheds light on the timeless relevance of his exploration of bonding and emancipation.

রবীন্দ্রনাথের নাটকে বন্ধন ও মুক্তির আকাঙ্খা, ড.শ্রাবণী সেন, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর, সঙ্গীত বিভাগ,তারকেশ্বর ডিগ্রি কলেজ,তারকেশ্বর,হুগলী, e-mail- srabanisn1@gmail.com Mobile no- 6290242709

বাংলা নাটকের ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের অবদান অনস্বীকার্য। রবীন্দ্রনাথের নাটক প্রচলিত প্রথার অনুগামী নয়, বরং স্বকীয়  জীবনচেতনার অঙ্গীরসে জারিত এই নাটকেগুলো তাঁর শিল্পীসত্তার আত্মপ্রকাশের  অন্যতম মাধ্যম। উনিশ শতকের মধ্যভাগে  ইউরোপীয় ভাবপ্রভাবে  নাট্যচেতনার বিকাশ ঘটে ঠাকুর বাড়ীর প্রাঙ্গণে। এইভাবে দীক্ষিত হয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথও। তাঁর সুদীর্ঘ জীবনে নব নব সৃষ্টিলীলায় বাংলা নাট্যসাহিত্যে অভূতপূর্ব বৈচিত্র্য এনেছিলেন তিনি। এই বৈচিত্র্য শুধু বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধই করে নি, বরং তা বঙ্গের যুগরুচি সংস্কারে এবং বিশ্বমননের উপযোগী করে তোলার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

 রবীন্দ্রনাথের মৌলিক নাটকের সংখ্যা ৩৮। এই নাটকগুলোকে কয়েকটি বর্গে বিভক্তি করা যায়। যেমন গীতিনাট্য, নিয়মানুগ নাটক,কাব্যনাট্য,নৃত্যনাট্য, প্রহসন–কৌতুকনাট্য ও রূপক-সাংকেতিক নাটক।

 রবীন্দ্র-নাট্যসাহিত্যের শ্রেষ্ঠতম ধারাটি হল তাঁর রূপক-সাংকেতিক নাটকের ধারা। শাখাটির বিকাশ শুরু হয় রবীন্দ্রনাথের কাব্যজীবনের ‘গীতাঞ্জলি’-পর্বে। সমকালীন ইউরোপীয় নাট্যসাহিত্যের রূপক-সাংকেতিক ধারার প্রভাবে, বিশেষত বেলজিয়ান নাটকের মেটারলিংক ও নরওয়েজিয়ান নাট্যকার হেনরিক ইবসেনের প্রতীকী নাট্যশৈলী ছিল রবীন্দ্রনাথের প্রধান অনুপ্রেরণা। শারোদোৎসব(১৯০৮), রাজা(১৯১০),ডাকঘর(১৯১২),অচলায়তন(১৯১২),ফাল্গুনী(১৯১৬),মুক্তধারা(১৯২২),রক্তকরবী(১৯২৬)-এই শ্রেণীর প্রধান নাটক।

রবীন্দ্রনাথের রূপক-সাংকেতিক নাটকে রূপক ও সংকেতের সাহায্যে জীবন ও জগতের বিভিন্ন দিক দেখানো হয়েছে। ‘রাজায়’ অরূপের সন্ধান, অচলায়তনে প্রথাবদ্ধ ও শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও জীবনের স্হবিরতা থেকে মুক্তি,’ ডাকঘর’-এ নিরুদ্দেশ সৌন্দর্যের  সন্ধান, মুক্তধারায় যণ্ত্রসভ্যতার উপরে মানব চৈতন্যের প্রতিষ্ঠা কিংবা রক্তকরবীতে সৌন্দর্য ও প্রাণের  আহ্বান ঘোষণার মধ্যে দিয়ে বাংলানাটকে রবীন্দ্রনাথ  অভিনবত্ব এনেছেন।

রবীন্দ্রনাথের নাটকে বন্ধন থকে  মু্ক্তির আকাঙ্খার স্বাদ পাওয়া যায় । তাঁর অচলায়তন(১৯১২),মুক্তধারা(১৯২২), নাটকে যেমন বন্ধন আছে, আছে সেই বন্ধন থেকে মু্ক্তির আকাঙ্খা। শেষ পর্যন্ত মু্ক্তির আকাঙ্খাই জয়ী হয়। রবীন্দ্রনাটকের পরিণতি বিয়োগান্ত নয়, মিলনান্ত, যদিও যণ্ত্রনা,দুঃখ, মৃত্যু ,আত্মাহুতি অনেক বেদনাদায়ক ঘটনা, নাটকের মধ্যে  পাওয়া যায় । রবীন্দ্রনাথ সর্বত্রই মুক্তির পক্ষে এবং বন্ধনের বিপক্ষে।  তাঁর নাটকে দেখা যায়, মুক্তির জন্য মানুষ কাজ করছে, চঞ্চল অস্হির হয়ে উঠছে, কিন্তু বন্ধন তো বাস্তবতা তাকে ভাঙা যায় না, তবু ভাঙতে হয়। এই ভাঙার মধ্যে দিয়ে বন্ধনের রূপ পরিস্ফুট হয়ে ওঠে।

যেমন – গানে বলেছেন –

খাঁচার পাখি ছিল সোনার খাঁচাটিতে

বনের পাখি ছিল বনে

একদা কি করিয়া মিলন হল দোহে

কি ছিল বিধাতার মনে।

-পাখি মুক্তি চায়। কিন্তু তার মুক্তির প্রসঙ্গে খাঁচার কথা এসে যায়। পাখির বেদনাকে সত্য করে দেখতে হলে খাঁচার বদ্ধতা ও কঠিনতার প্রসঙ্গ এসে যায়। একইভাবে তাসের দেশ নাটকে বাঁধ ভাঙার  অর্থাৎ নিয়মকানুন শৃঙ্খলের বাঁধ ভেঙে দেওয়ার কথা গানে শুনতে পাই –

বাঁধ ভেঙে দাও, বাঁধ ভেঙে দাও,

বন্দী প্রাণ মন হোক উধাও

অর্থাৎ পাখির মত রাজপুত্র নাটকে বলছে সোনার খাঁচায় সে আর বন্দী থাকবে না। মুক্তির সন্ধানে সে বেড়িয়ে পড়ে।

রাজা নাটকটি রবীন্দ্রনাথের সমগ্র জীবনের তত্ত্ব প্রতিভূ। রাজা প্রকাশ্যে আত্মপ্রকাশ করেন না। তিনি অরূপ জগতের। কিন্তু রূপপিয়াসিনী রাণী সুদর্শনা রাজাকে রূপাসক্তির মধ্যে পেতে চান। কিন্তু পান না। যদিও রাজাকে উপল্ধি করতে পারেন তার ভক্ত ঠাকুরদা এবং পরিচারিকা সুরঙ্গমা। অবশেষে রাণী একদিন রাজার অতি ভয়ঙ্কর রূপ ও মূর্তি দেখে ভীত ও বিতৃষ্ণ হয়ে পালিয়ে যায়। রবীন্দ্রনাথ এই নাটকে রূপ ও অরূপের দ্বন্দ্ব দেখিয়েছেন। রাণী শেষে ভুল বুঝতে পেরেছেন। রূপের প্রতি তার ঘৃণ্য পিপাসা দূর হয়ে রাজার মধ্যে অরূপের সন্ধান পেয়ে ধন্য হয়েছেন।

রাজা নাটকের গানগুলো বিশেষ অর্থে সাংকেতিক। এই  নাটকে তিনি সুদর্শনার প্রতি নেপথ্যচারী রাজার মত হাত দিয়ে দ্বার খুলতে চান নি, গান দিয়ে দ্বার খুলতে চেয়েছেন। রাজা অন্ধকারের নাটক,গানই সে অন্ধকারের আলোক রশ্মি।

আমি রূপে তোমায় ভোলাব না -গানটি কেবল সুরঙ্গমার প্রতি রাজার উক্তি নয়। এই গানে সুরঙ্গমার প্রতি রাজার প্রেমাদর্শ ও তার স্বরূপ বিজ্ঞপিত। প্রেমের দেবতা বাইরের ঐশ্বর্যের দ্বারা মনোহরণ করেন না,অন্তেরে গভীর প্রেমসম্পদের দ্বারা  তিনি আমাদের আপন করে নেন। গানে  রাজার অরূপতত্ত্ব  ফুটে উঠেছে। আবার নাটকে সুরঙ্গমার সাধনা যেন দাস্যভক্তির, আবার দাদাঠাকুর যেন সখ্যভক্তির। সুরঙ্গমার গানগুলোতে দাস্যের সরল বিশ্বস্ত আত্মসমর্পণ ফুটে উঠেছে। অকপট সেবাপরায়ণতা, চরণ-বরণের নিরুদবিগ্ন আগ্রহ প্রকাশ পেয়েছে’ – আমি তোমার প্রেমে হব সবার কলঙ্কভাগী’ গানে।

আবার নৃত্যের ছন্দে বন্ধন মুক্তি ঘটে হাসিকান্না হীরাপান্না দুলে ওঠে, ছন্দ ও ভালোমন্দ একসাথে উণ্মথিত হয় –

মম চিত্তে নিতি নৃত্যে কে যে নাচে
তাতা থৈ থৈ, তাতা থৈ থৈ, তাতা থৈ থৈ ।
তারি সঙ্গে কি মৃদঙ্গে সদা বাজে
তাতা থৈ থৈ, তাতা থৈ থৈ, তাতা থৈ থৈ ।
হাসি কান্না হীরাপান্না দোলে ভালে,
কাঁপে ছন্দে ভালো মন্দ তালে তালে
নাচে জন্ম, নাচে মৃত্যু পাছে পাছে
তাতা থৈ থৈ, তাতা থৈ থৈ, তাতা থৈ থৈ ।
কী আনন্দ, কী আনন্দ, কী আনন্দ,
দিবারাত্রি নাচে মুক্তি, নাচে বন্ধ –
সে তরঙ্গে ছুটি রঙ্গে পাছে পাছে
তাতা থৈ থৈ, তাতা থৈ থৈ, তাতা থৈ থৈ ।

সীমার মধ্যে অসীমকে পাওয়া যায় ডাকঘর নাটকে। বালক অমল ব্যাধিতে শয্যাগত। সে ঘরের সীমা এবং  বন্ধন ছেড়ে মুক্ত হয়ে অসীমলোকে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে। বাইরের সীমাহীন জগৎ তাকে প্রতিনিয়ত  ডাকে। শুয়ে শুয়ে সে অসীম লোকের রাজার কথা ভাবে। তার ধারনা রাজা তাকে চিঠি পাঠাবে।অসীমের পিয়াসী এই বালক বিশ্বাস হারায় না।  অসীমের সত্যদর্শনে তার মন আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। তারপর একদিন রাজার ডাকঘর স্হাপিত হয় – এ হল ভগবানের বহিঃপ্রকাশ-এই ই বিশ্ব। অমল মুমু্র্ষ মানবতার প্রতীক। ডাকঘর অসীম ঈশ্বরের প্রতীক। অমল আশা করে রাজার প্রেরিত একটি চিঠির। সে চিঠি তাকে সীমার গণ্ডি থেকে দূর-সুদূরে নিয়ে যাওয়ার নিমন্ত্রণ জানাতে চায়  -বদ্ধ মানবাত্মা মুক্ত মানবাত্মায় পরিত্রাণ পেতোচায়। অমলও তাই চেয়েছিল। সে মুক্ত মানবাত্মার প্রতীক হয়ে তাই অসীমের বুকে মিশে যায়।

মুক্তধারা রূপক সাংকেতিক নাটক বলেই এ নাটকে সংগীতের  ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রবীন্দ্রনাটকের মধ্যে গান হচ্ছে দ্বারোদ্ঘাটনের চাবিকাঠি। এই সাংকেতিক নাটকগুলোতে গানকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। কোন কোন গানে যেমন নাটকের মর্মকথা ব্যক্ত হয়েছে, তেমনি কোন কোন গান কোন বিশেষ চরিত্রের আত্মপরিচয় জ্ঞাপক রূপে ব্যক্ত হয়েছে। মুক্তধারা নাটকে গানগুলো মূলত ব্যবহৃত হয়েছে ধনঞ্জয় বৈরাগীর কণ্ঠে। এই নাটকের দ্বন্দ্ব কল্যাণের সঙ্গে অকল্যাণের।

নাটকে ধনঞ্জয় বৈরাগীর কণ্ঠে বাউল বা বৈরাগী চরিত্রকে রবীন্দ্রনাথ তাঁর রূপক সাংকেতিক নাটকগুলোতে শুদ্ধ বিবেকের প্রতীকের মত ব্যবহার করেছেন। নাটকে ধনঞ্জয় বৈরাগীর অনেক গানের মধ্যেও আছে সংগ্রামের সুর, প্রতিবাদের ভাষা। মুক্তধারার বাঁধ মুক্তির প্রতিবন্ধক। ঝরণা ধারার মুক্তি মানব জীবনের মুক্তি। ধনঞ্জয় নাটকে অত্যাচারিতের আত্মশক্তি স্বরূপ। রাজার সঙ্গে শিবতরাইবাসীর দ্বন্দ্বের সেই শিবতরাইবাসীকে নেতৃত্ব দিয়েছে। তর অস্ত্র নির্ভীকতা। শিবতরাইবাসীকে সে এই মণ্ত্রেই দীক্ষা দিতে চায়। আবার রাজার বিরুদ্ধেও তার এই অস্ত্র। মানুষকে জাগাবে এই তার পণ। গানে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন-

আমি    মারের সাগর পাড়ি দেব বিষম ঝড়ের বায়ে

আমার  ভয়ভাঙা এই নায়ে ॥

          মাভৈঃ বাণীর ভরসা নিয়ে   ছেঁড়া পালে বুক ফুলিয়ে

তোমার ওই পারেতেই যাবে তরী ছায়াবটের ছায়ে ॥

          পথ আমারে সেই দেখাবে যে  আমারে চায়–

আমি    অভয় মনে ছাড়ব তরী, এই শুধু মোর দায়।

          দিন ফুরালে, জানি জানি,   পৌঁছে ঘাটে দেব আনি

আমার  দুঃখদিনের রক্তকমল তোমার করুণ পায়ে ॥

-ধনঞ্জয়ের জীবন দর্শন এই গানের মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আর একটি গান-

আরো আরো প্রভু আরো আরো

এমনি করেই মারো মারো

লুকিয় থাকি আমি পালিয়ে বেড়াই

ধরা পড়ে গেছি আর কি এড়াইই

ভয়ে ভয়ে কেবল তোমা এড়াই

যা কিছু আছে সব কারো করো।

 শিবতরাইয়ের মানুষদের আত্মবলহীনতা ধনঞ্জয়ের উপর আত্যন্তিক নির্ভরতার প্রক্ষিতে ধনঞ্জয় তাদের আত্মশক্তি উদ্বোধনের জন্য গানটি শুনিয়েছেন।

আবার আমায় পাড়ায় পাড়ায় ক্ষপিয়ে বেড়ায় কোন ক্ষ্যাপা সে – এই গান ধনঞ্জয় রাজার সমনে গেয়েছে। রাজার প্রশ্ন প্রজাদের খাজনা না দেবার জন্য ধনঞ্জয় ক্ষেপিয়েছে কি না তার উত্তরে  ধনঞ্জয়ের এই গান । ধনঞ্জয়ের এই গানে পাওয়া যায় বৃহত্তর জগতের ব্যাপ্তির প্রতি ইঙ্গিত। রাজার সংকীর্ণ চিন্তার উর্দ্ধে ধনঞ্জয় তার ব্যাপ্তির ভাবনাকে স্হাপন করেছে।

রাজার হুকুম জারির বিরুদ্ধে, রাজার শাসনের উর্দ্ধে যে বিশ্ববিধাতার শাসন সেই কথা  ধনঞ্জয় রাজাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে গানের মাধ্যমে –

রইল বলে রাখলে কারে

হুকুম তোমার ফলবে কবে

টানাটানি টিকবে না ভাই

রবার যেটা সেটাই রবে।

রাজার বাহুবল,যাকে রাজা মনে করছেন,তা যে নিতান্তই অকিঞ্চিৎকর,ধনঞ্জয় সেই কথাই বলতে চেয়েছেন।

মুক্তধারা আসলে জীবনের প্রতীক। নাটকে মুক্তধারা ও জীবনকে অভিন্ন বলে ধরা হয়েছে। মুক্তধারার ধর্ম চলা, জীবনের ধর্ম ও তাই। মুক্তধারার মত গতিতেই জীবনের পরিচয়, গতির মধ্যেই জীবনের সার্থকতা।

মৃত্যু জীবনের নবমূল্যায়ণ করে -মানব জীবনের তাৎপর্য অন্বেষণ করার উপলব্ধি করায়।এই রীতি মুক্তধারার মধ্যে অভিনববিষ্ট। কারণ মানব জীবনের অব্যাহত স্বাচ্ছন্দ্য, অবিরাম গতিই মুক্তধারা। গতির স্রোতে মানুষ নিত্য ভাস্যমান। জন্ম জন্মান্তরের  নানা অবস্হার মধ্য দিয়ে সে নিত্য অগ্রসরমান। গতিই জীবনর স্বরূপ,গতিই জীবনের সার্থকতা।

রাজশাসন যণ্ত্রশক্তির সাহায্যে মানুষের সচল জীবনধারায় বাধা সৃষ্টি করেছে।।যণ্ত্রসর্বস্বতায়  মানুষের  অন্তরাত্মা পীড়িত। কুমার অভিজিত সেই  নিপীড়িত মানবাত্মার প্রতীক। সমগ্র বিজিত পরাধীন জাতির অন্তরাত্মার প্রতীক ধনঞ্জয় বৈরগী। নাটকে বিদ্রোহের রূপ ফুট উঠেছে রাষ্ট্রনীতির বিরুদ্ধে। উভয়েই মানব মুক্তির সপক্ষে।

কোন বন্ধন মানব আত্মাকে আবদ্ধ করতে পারে না, মৃত্যুর মাধ্যমে জীবনের মু্ক্ত স্বরূপকে  ফিরে পাওয়া যায় – কবির এই ইঙ্গিত সমগ্র নাটকের মর্মকেন্দ্রে বিরাজিত। স্বীয় মুক্তি  এবং সমগ্র বদ্ধ মানবের মুক্তি কমনা নাটকের বিষয়স্তু। তাই বলা যায় রবীন্দ্রনাথ নাটককগুলো বাংলা সাহিত্যে এমনকি বিশ্বসাহিত্যের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

তথ্যসূত্র

 ১। ড. অরুণকুমার বসু – বাংলা কাব্যসংগীত ও রবীন্দ্রসঙ্গীত।

 ২। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় – রবীন্দ্রনাট্যে গানের ভূমিকা।

 ৩। প্রফুল্ল কুমার চক্রবর্তী – রবীন্দ্রসঙ্গীত -বীক্ষা কথা ও সুর।

 ৪। শান্তিদেব ঘোষ – রবীন্দ্রসঙ্গীত।

৫। সুভাষ চৌধুরী – রবীন্দ্রনাথের গান ও অন্যান্য।

৬। নির্মলচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – রবীন্দ্রসঙ্গীত জিজ্ঞাসা।