

গ্রুপ থিয়েটার সংলগ্ন যে ধারাটি সজীব ভূমিকা রেখে চলছে, তা হল গণনাট্য। এরই মধ্যে দিয়ে সাংস্কৃতিক শাখা-গুল্মের বেড়ে ওঠায় কত শিল্পী, অভিনেত্রী হতে এসেছিলেন এবং হারিয়ে গেছেন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। গ্রুপ থিয়েটার পর্বে উনিশ শতকের মতনই কিছু জাতিকাদের সংসার, পরিবারের প্রতিপালনে রোজগেরে ভূমিকায় দেখাতে পেরেছিল। এর একটি দিক রোজগারের সন্ধান হলেও, অন্যদিকে তারই ধারায় জাতিকাদের একদল শিল্পের সাধনায় ছিল সাধনে। একুশ শতকের দ্বিতীয় দশকে এসে বস্তুত অভিনেত্রী-শিল্পী- অ্যাকট্রেস শব্দের মধ্যে নিমজ্জিত হয়ে রয়েছে এমন অনেক নাম, যাঁদের গুণগত পরিমাপে থিয়েটার কর্মের নিরিখেই বিশ্লেষণ করার। অবিরত চলা অভিনয়ে থাকা নাট্যকর্মীদের মধ্যে অন্যতম চিত্রা সেন। তিনি গ্রুপ থিয়েটার– অভিনেত্রীর হওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য অভিনেয়- শিল্প মাধ্যমে অভিনয় করেছেন। যথা, বেতার মাধ্যম, দূরদর্শন বা ছোট পর্দা, এবং সিনেমা। তার কারণ ছিল এই যে, “নাটকের অভিনয় নইলে থেমে যাবে, দলের শো বজায় রাখতে। সেদিন বলতে হয়েছে পেমেন্টটা আজকেই নেব কিন্তু।” একথা জ্ঞাত যে, সিনেমায় শুরু থেকেই অভিনেত্রীদের জোগান দিয়েছে থিয়েটার। প্রথম বাংলা নির্বাক চলচ্চিত্রে তারকবালা (লাইট) নামের এক মঞ্চ অভিনেত্রী যোগ দিয়েছিলেন। চিত্রা সেন সেদিক থেকে দেখতে গেলে সেই খাঁটি শিল্পীর বোধ থেকে জারিত। এরকমই চর্চা থেকে স্ফুরিত হয় নাট্যের শিল্পী বা ‘নাট্যকর্মী” বললেন চিত্রা সেন। চিত্রা সেন-এর ক্ষেত্রেও ঘটেছে। তাহলে, এতদ্বারা আলোচনা থেকে যা মিলল তা হল একটি সক্রিয় সত্তা, যা শুধুমাত্র অভিনেত্রীর বোধে সীমিত নয়। যা শিল্পীর বোধে জাগ্রত করে সত্তা শব্দটির সঙ্গে সম্পৃক্ত করে থাকে। এবং সেই সত্তার সন্ধানে গ্রুপ থিয়েটার পর্বের অভিনেত্রীদের হলদে পাতা থেকে পড়া, দেখা ো বিশ্লেষণ করা। এই যে থিয়েটার-অ্যাক্টরেস বা নাট্যাভিনেত্রী, তাঁদের একজন হলেন চিত্রা সেন। সময়ের নিরিখে অভিনেত্রী, নির্দেশক, নাট্যকার, কবি এবং গবেষক প্রভৃতি বিশেষ বিশেষ পরিচয়-কর্মে স্ফুরিত এবং চলমান গ্রুপ থিয়েটার পর্ব। ততদিনে গ্রুপ থিয়েটার পর্বে এসে যেমন যোগদান করেছেন অভিনেত্রীরা, তেমনই তাঁদের মূল্যায়ন নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তুলনাত্মক আলোচনায় নারীবাদ, নারীর ক্ষমতায়ন পৃথকভাবে নারীর অধিকারের বিষয়গুলো পৃথিবীর ইতিহাসে জিজ্ঞাসু করে। প্রশ্নবোধক এ পর্যায়ে, অভিনেত্রী শব্দের ব্যবহার নিঃসন্দেহে একটি দিক দর্শায়, যা জাতির কাছে লিঙ্গভেদ, নারীবাদ, নারী শিল্প-শ্রমিক ও নারী শিল্পীপেশাগত ভূমিকা নিয়ে সঙ্গত আলোচনার দাবি রাখে। এবং সন্ধানী করে তোলে নাট্যকলায় অভিনেত্রীর ভূমিকা ও স্থান নির্ণয়ে। এবং যে কোন গবেষণা প্রবন্ধের আলোচনা এই অর্থেই সদর্থক হয়ে ওঠে, যদি তার তাৎপর্য থাকে সমাজের কাছে। অর্থাৎ, সমাজে তার প্রয়োজনীয়তা কতটা। সেই নিরিখেই নাট্যকলার প্রায়োগিক দিক অর্থাৎ, যেক্ষেত্রটি অভিনয় দ্বারা মণ্ডিত, তা নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত। জিজ্ঞাসার উত্তর খুঁজতে পৌঁছে যেতে হয় মঞ্চে, হলে, থিয়েটারে বা প্রেক্ষাগৃহে। অতিমারিকালে এর অবস্থান শূন্য দর্শক ভেবে, মুষ্টিমেয় সস্তা মাধ্যমওলা যদিওবা ছন্দপতন ভেবে থাকেন, তবুও মঞ্চনাটক তার কাজে চলমান। কলকাতা, একালের রাজধানী শহর। বলেই, সেখানে মঞ্চনাটক-এর শুরু। এমতাবস্থানে আনন্দিত হওয়া যে, সেই কলকাতাস্থিত একটি মঞ্চে টইটুম্বুর দর্শকের স্মমুখে অভিনীত হয়ে গেল ‘জলছবি’। ‘জলছবি’ মঞ্চনাটক। অতিমারিকালের বাংলা থিয়েটার নিয়ে যত গালগল্পগুজব, সব ফেল। লোকে লোকারণ্য অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্ট-এর একতলা দোতলা। ২৫ ডিসেম্বর ২০২১। সাজ সাজ রব কল্লোলিনী তিলোত্তমার। খাঁটি সাহেবিয়ানায় বড়দিন মেনে শহরের আনন্দে ভেসে যাওয়া। এরই মধ্যে হাউসফুল শো। মনে হচ্ছিল নিন্দুকদের ডেকে এনে দেখানো যাক। কি করে হয় এত দর্শক। সবাই চুপ। থার্ড বেল পড়তেই পিন পতন নিঃশব্দের ডিসিপ্লিন জারি। নিয়মানুগ থিয়েটার হলে এরকমই হতে হয়। কিন্তু কই হল আর, ডিজিটাল ফড়িং মুঠোয় মুঠোয় চূড়ান্ত বেজে উঠতেই সীমা মুখোপাধ্যায় সংলাপ থামিয়ে বললেন , “বাজিয়ে নিন। তারপর নাহয় নাটক করা যাবে।” সহজেই বোঝা গেল বুঝি। থেমে গেল বাজনার মোবাইল। কিঞ্চিৎ দূরে ফিসফিস নিয়েই চলল নাটক, ‘জলছবি’। নির্দেশক সীমা মুখোপাধ্যায়। এবং অভিনয়েও তিনি। জলছবি নাটক পূর্ণ দৈর্ঘ্যের। একুশ শতকের নাট্যমঞ্চে অভিনীত হয়ে চলেছে দীর্ঘসময়। দীর্ঘ বলতে কতদিন? ২০১০ সাল থেকে ২০২১ এর ডিসেম্বর। কত হয়? প্রশ্ন করলেন বর্ষীয়ান তরতাজা অভিনেত্রী চিত্রা সেন। টানা এতগুলো বছর। হ্যাঁ, আমাদের ভিত তৈরি হয়েছে গণনাট্য এবং গ্রুপ থিয়েটার থেকে। সীমারও থিয়েটারে হয়ে গেল তো। ক যুগ রে তোর? আমার তো জ্ঞানেশ মুখোপাধ্যায়ের হাতে শুরু। আর এখনও চলছি। এদিকে দর্শক ঢুকে আসছেন সাজঘরে। তাই প্রসঙ্গ জলছবি থেকে দর্শক হয়ে বিশ্লেষণ।

প্রসঙ্গ জলছবি, দর্শক ও চিত্রা সেন
২০২১ এর অ্যাকাডেমি , দোতলা হল তো হাততালিতে উল্লসিত। দর্শক এক তরুণী ধরে ফেলা গেল। কেন এসেছেন দেখতে? জানালেন পিয়ালি বসু যে, চিত্রা সেন –কে দেখব বলে এসেছি। কেননা, আমি ওঁর অভিনয় দেখার সুযোগ পায়নি। কেমন লাগল, জানতে চাইলে তিনি জানালেন, ভাল, বেশ ভাল। কেননা আমাদের চেনা পরিবারের গল্প। মা, মেয়ের গল্প। মূলত সমাজের কাঠামো। ভিড়ের মধ্যে থেকে আরেকজন দর্শককে পাওয়া গেল। তিনি উচ্চ-বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা পারমিতা রায়। কেন এলেন দেখতে ‘জলছবি’। প্রতিক্রিয়া মিলল, এক তো চিত্রা সেনের অভিনয়। আগে দেখিনি। ওয়েবমাধ্যমে দেখলাম এক বন্ধুর সূত্রে তিনি মঞ্চাভিনয়ে আসছেন। কাজেই অনলাইনে টিকিট কাটলাম। আর দেখলাম নির্দেশক আরেকজন মহিলা। সীমা মুখোপাধ্যায়। তাই ইচ্ছে হল দেখার কি কাজ করছেন ওঁরা। কারণ, নির্দেশক হিসেবে আমি তো শম্ভু মিত্র, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, উৎপল দত্ত – দের জানি। মেয়েরা নির্দেশক সেটাই দেখার ছিল। কথা বলতে বলতে জানালাম পারমিতাকে যে, সীমাদি নিজেও একজন অভিনেত্রী। পারমিতার উত্তর, হ্যাঁ, আজ দেখলাম, বুঝলাম। কিন্তু সিরিয়াল না করলে কি করে চিনব বলুন তো।
সেটা ঠিক, দর্শকদের দোষ নেই। পারমিতা এবং পিয়ালিকে জানালাম যে, গ্রুপ থিয়েটারের শোভা সেন, তৃপ্তি মিত্র-দেরও নিজেদের দল ছিল। নির্দেশনা দিয়েছেন। এবং সম্মানিত হয়েছেন। তাছাড়াও অনেক নাম, যেমন, ঊষা গাঙ্গুলি। যেমন, স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত। যেমন, সোহাগ সেন। আরও নাম রয়েছে। আলোচনার অবকাশ না দিয়েই দর্শকের জনসমুদ্রে মিশে গেলেন ওঁরা। নাম জানা ছিল তো অনেক। কিন্তু জানাবার জন্যে সময় বা প্ল্যাটফর্ম নেই তো। দর্শকের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে কোথায় দাঁড়িয়ে বলবেন একজন অভিনেত্রী। প্রশ্ন সঠিক। সমস্যা হল দু –ঘণ্টা মঞ্চে অভিনয় করার পর, একজন ৮৮ বছর বয়সী অভিনেত্রী কিভাবে আরও কথা বলতে পারেন। একটু বিশ্রাম নিতে হয়। তারপর, প্রেক্ষাগৃহের নিয়মে পরের শো, পরের দলটি অপেক্ষায় থাকে। তাই প্রশ্নগুলো মুলতুবি রয়ে যায় পরের লেখার জন্যে। মাথায় ঘুরতে থাকে শুধু ,… উনি তো সিরিয়াল করেন না, তাই অচেনা।
সাজঘরে এসে ভিড়ের মধ্যেই তিনি। চিত্রাদি, চিত্রা সেন। মেকাপ তোলার অবকাশ পাননি। দর্শক, প্রিয় অভিনেত্রীকে দেখতে চলে এসেছেন। কথা বলা, সেলফি তোলা চলছে। জনৈক দর্শক বললেন যে, লোকে চাইছে, আপনি অভিনয় করুন আরও। কোথায় যেন অন্যমনস্ক হয়ে গেলেন তিনি। নিজের মধ্যে থেকে কি চরিত্রের মধ্যে থেকে বলতে লাগলেন, মধ্যের কিছু বছর, সময় যেন চলে গেল অকারণে। নইলে আরও শো হয়ে যেত। অতিমারি সময়ে তো থিয়েটার বন্ধ হয়ে গেল। তবে, আমাদের কাজ আমরা নিয়মিত করেছি। রিহার্সাল দিয়েছি। দেখা করে থিয়েটারি আলোচনা, আড্ডা, স্ক্রিপ্ট পড়া, আগামিতে কি প্রোডাকশন করা যায় সেই আলোচনা, এসবই তো জীবনের অঙ্গ। শুনছি ওঁর কথা। কোন আলো এসে মুখে পড়েনি। সময়ের আলোয় উদ্ভাসিত লাগছে। ব্ললাম, আপনি দুর্দান্ত অভিনেত্রী দিদি। সারা হল, মানে প্রেক্ষাগৃহ মানে দর্শক উচ্ছ্বসিত।
ফিনফিনে সাদা ওড়নায় কাল টিপ মুখে সদা হাসি অভিনেত্রী নন। জানালেন, আমি থিয়েটার করি। কর্মী। নাট্যকর্মী বলতে পারি? উত্তরে জানালেন তিনি, কেন নয়। এটাই তো প্রাপ্তি। এই কথাটা শোনার জন্যেই তো এত লড়াই। হ্যাঁ, সেই লড়াই করতে করতে বলে ফেলা যায় যে, না শো আছে। হবে না ডেট। ফলে অনেক চরিত্র হাত ছাড়া হয়ে যায়। তিনি জানান যে, অভিনয় করে মনের আরাম পেলেই তার মূল্য। এটাই কমিটমেন্ট থিয়েটারের জন্যে। ছিল, আছে, থাকবে। তারপর বললেন যে, বড় বেশি কি বলে ফেলছি। আমরা তো তেমন স্যাক্রিফাইস করিনি। আরও যাঁদের দেখেছি, যেমন, তৃপ্তিদি, শোভাদি, রেবাদি, মানে রেবা রায়চৌধুরী প্রমুখ, এঁরা হলেন নাট্যকর্মী। কি প্রাণ, কি চেতনা। কি বোধ। সেই সত্তা নিয়েও কাজ করে চলেছি। তবে শেষ দুটো বছর আর তেমন পারলাম কই। জানাচ্ছেন তিনি, এ বছরে দুবার জ্বরে আক্রান্ত। কি যে হল দুরবল লাগছে শরীর। তারপরই ডিসেম্বর এল। শোয়ের খবর এল। সীমা আর আমি রিহার্সাল করতে শুরু করলাম। সীমার সঙ্গে অভিনয় মানে সেই স্পিরিট ধরে রাখতে হয়। ও তো তারুণ্যে ভরা এক অভিনেত্রী, তাই গলা লাগে, স্বর, কণ্ঠ-ই তো সব। মানে, বাচিক। মিলিয়ে নেওয়া পড়ার বইয়ের সঙ্গে। তিনি বললেন যে, কথা বললে যেন দর্শক শেষ রো পর্যন্ত শুনতে পান। এটাই তো টেকনিক। এখন দুর্বল লাগছে। একটি বসে কথা বলা যাক। তবে, শোয়ের জন্যে কেমন যেন ফিট হয়ে গেলাম। থার্ড বেল পড়তেই সেই মঞ্চ। সেই আলো। সেই মেকাপের দুনিয়ায় নিঃশ্বাস ফেলা দূরত্বে বসে দর্শক। গন্ধ টের পাচ্ছি দর্শকের। এটাই স্পিরিট দেয়। মঞ্চে উপস্থিত সীমা, নির্দেশক সত্তার পাশাপাশি অভিনেত্রীও। দারুণ করল পার্ট। দেখলেন তো সবাই। ঐ হাততালি শুধু আমার ছিল না। থিয়েটার টিম ওয়ার্ক। হাততালি সব্বাই পেয়েছেন। যিনি আলো করছেন, যিনি শব্দ, যন্ত্র এবং মঞ্চের যাবতীয় করছেন, সামলাচ্ছেন – তাঁরাও তো নেপথ্যের শিল্পী। তাঁদেরও এই হাততালি। এবং তাঁদের ডেডিকেশনটা ভাবুন তো। কি আশ্চর্য। অন্য কোন কাজ তারা পাননি এই অতিমারি সময়ে। অনাহারে, অর্ধাহারে কাটিয়েছেন পরিবার নিয়ে। ফান্ড তৈরি হয়েছে, টাকা তোলা হয়েছে। কিন্তু তা এতগুলো নাট্যকর্মীর পক্ষে সামান্য, ফুরোয় সহজেই। কত মানুষ যে থিয়েটারের সঙ্গে জড়িয়ে তখন বোঝা গেল। শুধু সামনে দেখা নয়, না দেখা কতজন নির্ভর করে থাকেন এই মঞ্চের কাজে। পরিবার সব মিলে। আত্মীয় তাঁরাই। এই সবটাই স্পিরিট জোগায়। আজও। এই মঞ্চের আবর্তে এলেই মনেহয় এটাই ঘরবাড়ি আমাদের। ২১ বছর বয়সে এসেছিলাম। এখন ৮৮ হল। তাহলে? এটা কিভাবে পারছি। থিয়েটার এভাবেই তৈরি করে দিয়েছে আমাদের। আপনি তো গ্রেট শিল্পী। না শিল্পী না। শিল্পী মানে অনেক বড় ব্যাপার। তৎক্ষণাৎ সীমা মুখোপাধ্যায় বলে উঠলেন, অবশ্যি চিত্রাদি শিল্পী। অভিনয় শুধু নয়। সবদিক থেকেই। এ কমপ্লিট আর্টিস্ট। বিনয়ের সঙ্গে চিত্রা সেন বললেন, হ্যাঁ এতগুলো বছর যে কেটে গেছে বুঝিনি। এই যে কথা বলতে গিয়ে সালের হিসেব করা, তাতে মনেহয় অনেকদিন হল। তা, বেশি বলে ফেললাম কি। ‘জলছবি’ আমাদের এ বছরে একটাই শো হল। কারণ ঐ অতিমারি। তাহলে এবারে কি হয়ত হবে আরও শো। সীমা বলতে পারবে, ওর কি প্ল্যান।
নির্দেশক সীমা মুখোপাধ্যায় ও জলছবি

সীমা মুখোপাধ্যায় রঙরূপ দলের নির্দেশক। দল মানে গ্রুপ থিয়েটারের দল। সেই দলের প্রোডাকশন হল ‘জলছবি’। নাটকের বিষয় তো সমাজে প্রাসঙ্গিক বটেই। তাই তো এতদিন ধরে চলছে। নির্দেশক সীমা যা বললেন তা হল এই যে, নাটকের চলা দীর্ঘতর। যেমন ২০০৯ থেকে ২০২১ –এর ডিসেম্বর। মানে ১২ বছর। এক যুগ হয়ে গেল। হাসিখুশি প্রাণবন্ত নির্দেশক আর অভিজ্ঞ সহজিয়া অভিনেত্রী চিত্রা সেন। ওদিকে ১২ বছর আগে সীমা মুখোপাধ্যায় ভেবেছিলেন, ‘জলছবি’ নাটক মঞ্চস্থ করবেন। ভাবতেই প্রথম কাজ হল চরিত্রায়ন। কে করবে মায়ের চরিত্রটা। সীমা এক নিমেষে চোখ বুজতেই ভেসে উঠল চিত্রা সেন-এর মুখ। ফলে, তাঁর কথায়, “ওটা চিত্রাদিকেই মানায়।” কেন? “কারণ, তিনি এমন এক অভিনেত্রী যে সব চরিত্রে মানানসই। গলা মানে স্বরক্ষেপণ, মুখের আদল, ভাব ইত্যাদি কোমল এবং প্রয়োজনে কমিয়ে বাড়িয়ে ব্যবহার করা, চিত্রাদি জানেন।” হ্যাঁ, উনি চিত্রাদি তো সেই কবে থেকেই দেখছি। শিখছি। অভিনেত্রী হিসেবে ওঁর মতন কেউ … তাই উনিই। নির্দেশক সীমার কাছে এও এক মহা পাওনা যে, শুনতেই রাজি হলেন চিত্রাদি। এত ব্যস্ততার মধ্যে? কারণ, থিয়েটার মানে তো রিহার্সাল এবং রিহার্সাল। লাইভ অভিনয় বলে কথা। এরজন্যে তৈরি হওয়াটা বেশ কঠিন, সময়সাপেক্ষের এবং একটানা করে যাওয়াটাও তো থাকে। ফলে, খুব শক্ত।
কথাগুলো শুনে হেসে বললেন বর্ষীয়ান চিত্রা, দেখো, অভিনয় মানে তো থিয়েটার। মঞ্চ। সেটাই শিখে এসেছি। আমরা তো গণনাট্যে কাজ করে এসেছি। নৃত্যশিল্পী থেকে একদিন পাঠ পেলাম। অনেক স্ট্রাগল করে অভিনয় চালিয়েছি।
গ্রুপ থিয়েটার চালাতে গিয়ে অফিস ক্লাবে অভিনয় করেছি। আর ক্যামেরায় কাজ? অনেক পরে এসেছে দূরদর্শন, সিনেমার পর্দা। এবং যে মাধ্যমে যতটুকু আজ অভিনয়ের কথা বলছি, সবটাই তো মঞ্চে শেখা। কথা বলা, মেপে কথা বলা, স্বরক্ষেপণ। শরীর সুস্থ রাখা। সবটাই তো থিয়েটার শিখিয়েছে। ফলে, এটি প্রথম পছন্দের। রক্তে মিশে গেছে। বোধে মিশে গেছে। আলাদা করে উল্লেখের দরকার নেই যে থিয়েটার আমার সত্তায় মিশে গেছে। তাই থিয়েটারের জন্যে সময় বের করার ব্যাপারটা নেই। ওটাই সবার আগে করব। কারণ, এটাই প্রথম পছন্দের। ফলে সীমা বলতেই রাজি হলাম। শুধু অভিনয় করার জন্যে নয়। চরিত্রটাও ছিল অন্যরকম। ফলে রিহার্সাল শুরু। এরপর কি হল। ফিরে যেতে হবে নির্দেশকের কথায়। অর্থাৎ, সীমা মুখোপাধ্যায় কি বলছেন। বলছেন, ‘খুব চেষ্টা করে তাই হাসিমুখে কলকাতার ভিড় ঠেলে রিহার্সালে হাজির সঠিক সময়ে। না তারিখ মিস হয়, না সময়, না ভুলে যান কবে কোথায় কাজের জন্যে ডেট দেওয়া।’

স্মিত হেসে জানান চিত্রা সেন, ‘সব লেখা থাকে। খানিকটা অভ্যেস বলতে পারো। অনেক কাজ তো করতেই হত। সংসারের জন্যে শুরু থেকেই পেশাদারিভাবে অভিনয় করা। অফিস ক্লাব, থিয়েটার পাড়ার জমজমাট শো-এর সঙ্গে পেটের একটা সম্পর্ক ছিল। অভিনয় ভালবাসার। অভিনয় হল সেই কাজটা যেটা এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে করে গেছেন আমৃত্যু কত শিল্পীরা। যেমন, তৃপ্তিদি। মঞ্চ থেকে মঞ্চেই তো চলছেন।’ চিত্রা সেন আপনি বিখ্যাত, খ্যাতনামা, অনেক পুরস্কার পেয়েছেন। কত হাততালি পেয়েছেন। আপনি কত নামজাদাদের নির্দেশনায় কাজ করেছেন। আপনি এবং আপনার জীবনসঙ্গী, শ্যামলদা মানে শ্যামল সেন, স্বপ্নসন্ধানী নাট্যদল। আরও কত অভিজ্ঞতা আপনার। নির্দেশক বয়সে অনুজ। কি করে রাজি হয়ে গেলেন? কি সুন্দর হাসতে জানেন তিনি। তিনি বললেন, ‘সীমা, ও তো দারুণ অভিনেত্রী। কাজ করতে করতে বুঝলাম নির্দেশক হিসেবেও দারুণ। থিয়েটার নিয়ে পড়া অভিনেত্রী। কোন বিষয় নিয়ে পড়া থাকলে, অনেকটা সুবিধে হয়। কারণ, নির্দেশনা মানে, থিয়েটারের সব কাজ জানতে হয়। সব। ওঁর শুরু তো সাত-আট বছর বয়স থেকে। কাজ করছে থিয়েটারে। সেটা ছিল প্রফেশনাল বোর্ডের থিয়েটার। ওঁর বয়স যাইহোক দীর্ঘ চর্চায় থেকে ওঁর অভিজ্ঞতা। সবই তো থিয়েটারে এসে। হ্যাঁ, ও সাজেশন চেয়েছে কিছু মনেহলে। তবে ওঁর কাজের ভিত তৈরি। ও খাটিয়ে থিয়েটার-কর্মী। আর এটা নিয়েই তো থিয়েটার করা। থিয়েটার মানে আদান-প্রদান। প্রতিদিন নতুন করে অভিনয় করে যাওয়া। নতুন দর্শক। নতুন চিন্তা নিয়ে শুরু করতে হয়। সীমা মুখোপাধ্যায়, দামি শিল্পী। থিয়েটার ওর প্রাণ, হৃদয় ভালবাসা। যেখানে কষ্টিপাথরে যাচাই হয়ে ওর শিল্পী সত্তা এখন হীরের দ্যুতি ছড়াচ্ছে। সীমা বয়সে ছোট, কিন্তু চিন্তায় নয়। ও কাজ করেছে কত শিল্পীদের নিয়ে। যেমন, স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত। যেমন আমি এবং আরও অনেককে নিয়ে। দল চালাচ্ছে কত বছর ধরে। সীমা মুখোপাধ্যায় তো আমাদের চোখের সামনে বড় উঠেছে। নির্দেশক সীমা জানান যে, মঞ্চায়ন হল ২০১০ এ ‘জলছবি’ নাটকের জন্যে চিত্রা-দি মানে চিত্রা সেন শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছিলেন। তবে চিত্রাদি ‘মায়ের মতো’ নাটকেও একটি চরিত্র অভিনয় করতেন। এখন ওটা সীমা মুখোপাধ্যায় করেন।
চিত্রা সেন বিষয় আন্তর্জাতিক থিয়েটার মহল জ্ঞাত ও চর্চিত। একুশ শতকের আন্তর্জালিক ব্যাপ্তিতে ওঁর কাজের পরিসংখ্যান দেওয়া যাক। নৃত্যশিল্পী হিসেবে শুরু। তখন তিনি চিত্রা মণ্ডল। সূচনা ঘটে ভারতীয় গণনাট্য সংঘ-এ যোগদান। পর পর যুক্ত হন থিয়েটার গিল্ড, বিবেক নাট্যসমাজ, চলাচল প্রভৃতি নাট্যদলে। অভিনয় করিয়ে হিসেবে প্রথম আত্মপ্রকাশ ঘটে ‘ ‘নীলদর্পণ’ নাটকের ক্ষেত্রমণি বা ছোট বউ।[i] সাড়া ফেলে দেন অলকানন্দা চরিত্রটি রূপদান করে, নাটক ‘অলকানন্দার পুত্রকন্যা’ বিখ্যাত অনেক কারণেই। এক্ষেত্রে অভিনেত্রী চিত্রা নাটকে অলকানন্দা-চরিত্রের জন্যে সম্মান পান রাজ্যের শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর। পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাডেমি, শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী সম্মান, সাল ১৯৯০। নাটকের দুনিয়ায় তিনি বেশ কয়েকটি উল্লেখ্যযোগ্য চরিত্রে বিখ্যাত। অতসী, হেমাঙ্গিনী, নয়না, সেনতে সুইতা, অচলা, বনলতা সেন এবং কুন্তী। তাঁর অভিনীত নাটকের নাম যথাক্রমে ‘শোভাযাত্রা’, ‘অলীকবাবু’, ‘যদুবংশ’,’ভালো মানুষের মেয়ে’,’গৃহদাহ’, ‘আঁখিপল্লব’,’প্রথম পার্থ’।ফের তিনি পুরস্কৃত হয়ে থাকেন শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার, পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাডেমি ২০১০ সালে।[ii] নাটক ‘জলছবি’ ফের দর্শকের সামনে ২০২১ সালের ২৫ ডিসেম্বর তারিখে।
পরম্পরার দুই অভিনেত্রী-র জলছবি

এমন দুই অভিনেত্রীকে নিয়ে আলোচনা, যাঁদের কাজ গ্রুপ থিয়েটারকে ঘিরেই। একজন কাজ করছেন বিজন ভট্টাচার্যের ‘লাশ ঘুইরা যাউক’ নাট্য-প্রজ্জনা থেকে। তিনি চিত্রা সেন। আরেকজন কাজ শুরু করেছেন প্রফেশনাল বোর্ডের থিয়েটার দিয়ে। সেখানে তিনি ছোট-নিমাই চরিত্রে, মঞ্চে ওঠেন বয়স সাত-আট বছর হবে। সেই শুরু। তারপর থেকেই চলছেন দুই শিল্পীই অবিচ্ছেদ্যভাবে। চিত্রা সেন নাটকের এসেছিলেন নৃত্যশিল্পী থেকে। আর সীমা মুখোপাধ্যায় সরাসরি নাট্যাভিনয়ে যুক্ত হন। সালের হিসেবে দেখলে দুই প্রজন্মের দুই অভিনেত্রী। গ্রুপ থিয়েটারের চলমান ধারায় কলকাতা ক্ষেত্রে কাজ করছেন, এবং হয়ে উঠেছেন একে অপরের পরিপূরক। আলোচনা ‘জলছবি’ নাট্য-প্রসঙ্গে অভিনেত্রীদের শুরুর দিকটা উল্লেখের। তাহলে, অভিনয়গত বর্ণনা স্পষ্টতর হয়ে ওঠে। সীমা মুখোপাধ্যায়-এর অভিনয় জীবন না জানা থাকলেও, একথা বুঝতে অসুবিধে হয় না যে , তিনি অনুশীলনের মধ্যে দিয়েই চালিত। অভিনয় কাকে বলে, শম্ভু মিত্র- মহাশয়ের লেখা পড়লেই বোধগম্য হয়। কিন্তু, তা দিয়ে অভিনেত্রী তৈরি হয় না। অভিনেত্রী মঞ্চে উঠে, তার সংলাপ বলবেন, তার ফুট ওয়ার্ক করা জায়গায় দাঁড়াবেন, আলো নেবেন, আলো তাকে নিয়ে সরে যাবে মঞ্চের এদিক থেকে ওদিক। এসব প্রযোজনাগত পরিধি এবং নাট্যকলাবিদ্যা শিক্ষার অংশ। যা নির্দেশকের থেকেও শেখা যায়। অনেকটা অভিনয় বোধ জাগ্রত হয় অভিনেয় চরিত্রের সংলাপ দ্বারা। কিন্তু, সীমা মুখোপাধ্যায় সেই একটা দৃশ্যে মাতিয়ে দিলেন, যেখানে সংলাপ ছিল না। ছিল শুধু থিয়েটারের ভাষায় এক্সপ্রেশন। আগের রাতের ভালবাসার মানুষের সঙ্গে থাকা, পরদিন সকালে সেটাই মায়ের কাছে বলছে মেয়ে সীমা, সীমা সেই মুহূর্তে নিজের মতন এক অভিনেত্রী হয়ে গেলেন। সে কারোর ছবি দেখা চরিত্রের রূপায়ন নয়। সে-ই হল দৃশ্য। না, সিরিয়ালে যিনি দেখেননি, তিনি কি মঞ্চের এই অভিনয় দেখলেন। যা নিত্যের আসা-যাওয়া রাস্তার ধারে দেখা মেয়েটার সঙ্গে মিল, অথচ অমিল, কেননা সীমা তো অভিনেত্রী। আরেকটি দৃশ্য মানে শেষ দৃশ্য, যখন মায়ের চেয়ারে বসলেন সীমা মুখোপাধ্যায়। সেই দৃশ্যে তাঁর সংলাপ জন্ম দিল আরেক অভিনেত্রীর কথা। যার তুলনাত্মক আলোচনা শুধুই বোধে, দেখা নাটকের। ঐ মঞ্চ-দৃশ্যে নাট্য-প্রযোজনা শেষ। কিন্তু, মনে রয়ে যায় ‘জলছবি’। প্রেক্ষাগৃহ পরিপূর্ণ। বেল বাজতেই পর্দা খুলে গেল। মঞ্চে দুই অভিনেত্রী। এক সীমা মুখোপাধ্যায়। দুই, চিত্রা সেন। মেয়ে ও মায়ের সংলাপ। অতিমারি সময়ে এও একধরণের লড়াই বলা যায়। চিত্রা সেন –এর বাড়িতেই চলত রিহার্সাল। তারই সঙ্গে চা-টা-টিফিন। অভিনেত্রী দুজনের কথাবার্তায় একটি বিষয়ই সার্বিকভাবে আলোচনায়। যে, থিয়েটার ভিন্ন তাঁদের আর পথ জানা নাই।
অতঃপর, বিশ্লেষণ করার দরকার নেই যে, এই হল নাট্য –পরম্পরা। হ্যাঁ, পরম্পরা তো বটেই সীমা মুখোপাধ্যায়কে চিত্রা সেন বলে দিলেন, ও আমাদের উত্তরসূরি। যোগ্য উত্তরসূরি। দিল্লির সিনিয়র ফেলোশিপ ২০০২ সালে। তারই আগে ১৯৯২ সালে সীমা শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী-র পুরস্কার, পশচিমবঙ্গ নাট্য অ্যাকাডেমি, কলকাতা থেকে। নাটক ‘বিকল্প’ এবং ‘বলিদান’। এর আগেই ১৯৮৫ সালে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার ;ক্লাউন’ নাটকে অভিনয়ের জন্যে। ঋত্বিক স্মৃতি পুরস্কার, দিশারি পুরস্কার লাভ করে। তাহলেই বুঝতে হবে সীমা কেন যোগ্য উত্তরসূরি। আর সীমা নির্দেশকের ভূমিকা থেকে ব্যাখ্যা করেন চিত্রা সেন –সত্তার। চিত্রা সেন একজন কমপ্লিট আর্টিস্ট। কেন? কারণ, তিনি সময়ের সঙ্গে চলেন। অসাধারণ অভিনেত্রী। জেনেও নিজেকে এখনও অনুশীলনে রাখেন, নির্দেশকের ভূমিকায় যিনি থাকেন তাঁকে গুরুত্ব দেন। এবং, তিনি ঝাড়ুহাতে অবলীলায় রিহারসালের ঘরটি পরিষ্কার করে অপেক্ষা করেন সহ- শিল্পীদের জন্যে।

যেখানে দুই অভিনেত্রী বলে থাকেন যে, আমাদের শো শুধু মঞ্চে উঠলেই নয়। প্রতিটা রিহার্সাল আমাদের শো। মধ্যেখানে কে কারা কথা বলছেন। ঐ দেখ, চিত্রা সেন। হ্যাঁ, হ্যাঁ চেনা, ওই যে কোন সিরিয়ালে … না না, সিনেমায়। সীমা মুখোপাধ্যায় বলে উঠলেন, এই যে … এবারে মঞ্চে উঠিয়ে দেব সংলাপ বলতে। এবারে সত্যিই দর্শক জনতা সরে গেল। সেকেন্ড কয়েক চুপ। তারপরই দুই অভিনেত্রী হাসিতে ভাসিয়ে দিলেন সেদিনের সাজঘর। থিয়েটার গবেষক সন্ধান পায়, একটি অনবদ্য অভিনয় সন্ধ্যার যেখানে দুই সত্তা পরস্পরের পূরক। আর প্রাপ্তি, চিত্রা সেন থেকে সীমা মুখোপাধ্যায়ের অভিনয়। ফাঁক রইল শুধু এই অভিনয় সংরক্ষণ করা যায় না। শুধু গবেষণার মাধ্যমেই পরবর্তী দশকের নাট্য-সংগ্রহে থেকে যাওয়ার।
গবেষণা পদ্ধতিঃ আলোচ্য প্রবন্ধের জন্যে নিরীক্ষামূলক এবং সাক্ষাৎকারভিত্তিক গবেষণা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে যথাক্রমে চিত্রা সেন এবং সীমা মুখোপাধ্যায়ের। চিত্রা সেন-এর সঙ্গে দূরভাষ যোগাযোগে কথালাপ হয় ২০ থেকে ২২ মে, ২০১৯ তারিখে, কলকাতা এবং শান্তিনিকেতন থেকে। চিত্রা সেন –এর বাসভবন, কলকাতা-তে ০৩ মার্চ ও ৪ মার্চ, ২০২১। বিকেল চারটে থেকে রাত নটা পর্যন্ত। এবং, একাডেমী অফ ফাইন আর্টস , কলকাতার শো-এর দিন, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২১। নিরঞ্জন সদন, কলকাতা-র প্রেক্ষাগৃহে, নাট্য উৎসব জানুয়ারি ১ থেকে ১০, ২০২১ তারিখ উৎসব চলাকালীন। এবং ২০ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, সময় দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৮টা, সাতদিন ব্যাপী কর্মশালা ভিত্তিক প্রযোজনার মাধ্যমে নিরীক্ষা করা হয় অভিনেত্রী, নির্দেশক সীমা মুখোপাধ্যায়ের নাট্যকর্ম।
তথ্যসূত্র-
[i] চক্রবর্তী মৌ; নবান্ন- পরবর্তী নাট্যধারায় একক চালচিত্রে চিত্রা সেন ; রায় সঞ্জীব (সম্পাদিত); কথাকৃতি নাট্যপত্র, নবান্ন পরবর্তী বিশেষ সংখ্যা; প্রথম প্রকাশ ডিসেম্বর ২০২১; কলকাতা; কথাকৃতি; পৃষ্ঠা ৮২ – ৮৪
[ii] ঐ
ছবি তালিকা
১। ছবি ১ চিত্রা সেন
২। ছবি ২ জলছবি পোস্টার রঙরূপ প্রযোজিত সীমা মুখোপাধ্যায় নির্দেশিত
৩। ছবি ৩ সীমা মুখোপাধ্যায়, অভিনেত্রী, নির্দেশক, রঙরূপ , কলকাতা
৪। ছবি ৪ নাট্য-কর্মশালা, নিরঞ্জন সদন, কলকাতা-য় উপস্থিত সভাসনে
নির্দেশক সীমা মুখোপাধ্যায়
৫। ছবি ৫ চিত্রা সেন, নাটকজলছবি পোস্টার রঙরূপ প্রযোজিত সীমা মুখোপাধ্যায় নির্দেশিত
৬। ছবি ৬ সীমা মুখোপাধ্যায়, অভিনেত্রী, নির্দেশক, রঙরূপ , কলকাতা
বিশেষ সৌজন্য রঙরূপ দলের সদস্য – জগন্নাথ চক্রবর্তী এবং রঙরূপ আর্কাইভ থেকে
মৌ চক্রবর্তী সঙ্গীত ভবনের একজন গবেষক ও প্রাবন্ধিক।
Email : mou.chakraborty@visva-bharati.ac.in
Phone No : 9836226846